- Get link
- X
- Other Apps
আসন্ন বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি পরীক্ষা: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩
আসন্ন বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি। বিগত বছরের বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান। পরীক্ষা: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার। প্রশ্ন নং ৯ এর ক ও খ
৯। ক) "Evidence has to be weighed and not counted The Evidence Act, 1872 এর ১১৪ ও ১৩৪ ধারার আলোকে দেওয়ানী মোকদ্দমা ও ফৌজদারী মামলায় এই ধারণার প্রয়োগযোগ্যতা উদাহরণসহ আলোচনা করুন।
৯। খ) বাটোয়ারা মোকদ্দমায় বাদী পিতৃত্ব প্রমাণের জন্য DNA পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা দেন। আদালত অভিমত ব্যক্ত করেন যে, উক্ত প্রতিবেদন দেওয়ানী মোকদ্দমায় সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আদালতের এই অভিমত The Evidence Act, 1872 অনুসারে আইনসঙ্গত কি? উত্তরের স্বপক্ষে সংশ্লিষ্ট বিধান উল্লেখে যুক্তি দিন। বাংলাদেশ। উভয় প্রশ্নের অতি সংক্ষেপে উত্তর দিন।
৯। ক) "Evidence has to be weighed and not counted" - প্রয়োগযোগ্যতা
এই উক্তিটির অর্থ হল, সাক্ষ্যের পরিমাণের চেয়ে গুণগত মান ও বিশ্বাসযোগ্যতা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। দ্য এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২ এর ১১৪ ও ১৩৪ ধারার আলোকে এর প্রয়োগযোগ্যতা নিম্নরূপ:
ধারা ১১৪ (অনুমান): এই ধারা অনুযায়ী আদালত কিছু তথ্যের অস্তিত্ব অনুমান করতে পারে, যা সাক্ষ্যের 'ওজন' নির্ধারণে সহায়ক। উদাহরণস্বরূপ, ফৌজদারী মামলায় যদি চোরাই মালসহ কাউকে ধরা হয়, তবে আদালত অনুমান করতে পারে যে সে হয় চোর অথবা জেনেও চোরাই মাল রেখেছে। এখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য এবং চোরাই মালের উপস্থিতিই প্রমাণের ওজন বাড়িয়ে দেয়, একাধিক সাক্ষী না হলেও চলে। দেওয়ানী মামলায়, যদি একটি দলিল যথাযথভাবে সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রিকৃত হয়, তবে আদালত অনুমান করতে পারে যে তা বৈধ। এখানে দালিলিক প্রমাণের ওজনই মুখ্য।
ধারা ১৩৪ (সাক্ষীর সংখ্যা): এই ধারা স্পষ্টভাবে বলে যে, "কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রমাণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যক সাক্ষীর প্রয়োজন নেই।" অর্থাৎ, একজনমাত্র বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষীর সাক্ষ্যও একটি মামলার নিষ্পত্তির জন্য যথেষ্ট হতে পারে (যেমন, দেওয়ানী মামলায় একজন চুক্তির সাক্ষী বা ফৌজদারী মামলায় একজন প্রত্যক্ষদর্শী)। পক্ষান্তরে, একাধিক সাক্ষী থাকলেও যদি তাদের সাক্ষ্য পরস্পরবিরোধী বা অবিশ্বস্ত হয়, তবে তা মূল্যহীন হতে পারে।
অতএব, দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় প্রকার মামলাতেই, আদালত সাক্ষ্যের গুণগত মান, বিশ্বাসযোগ্যতা, প্রাসঙ্গিকতা এবং ধারাবাহিকতা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেন, সাক্ষীর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে নয়।
খ) বাটোয়ারা মোকদ্দমায় DNA পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা
আদালতের এই অভিমত যে, DNA পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়ানী মোকদ্দমায় পিতৃত্ব প্রমাণের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়, তা দ্য এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২ অনুসারে আইনসঙ্গত নয়।
যুক্তি:
ধারা ৪৫ (বিশেষজ্ঞের মতামত): দ্য এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২ এর ধারা ৪৫ অনুযায়ী, যখন আদালতে বিজ্ঞান, শিল্পকলা বা হস্তলিপি সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন সেই বিষয়ে পারদর্শী ব্যক্তির (বিশেষজ্ঞের) মতামত প্রাসঙ্গিক বলে বিবেচিত হয়। DNA পরীক্ষা একটি স্বীকৃত এবং অত্যন্ত নির্ভুল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। তাই, একজন DNA বিশেষজ্ঞ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন এই ধারার অধীনে গ্রহণযোগ্য এবং প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
আধুনিক বিচার ব্যবস্থা ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা: বাংলাদেশের উচ্চ আদালতগুলো বিভিন্ন রায়ে DNA পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা স্বীকার করেছেন এবং পিতৃত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ হিসেবে নির্দেশ করেছেন। যদিও আদালত সাধারণত কোনো ব্যক্তিকে DNA পরীক্ষা করতে বাধ্য করেন না, তবে মামলার প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আদালত এমন নির্দেশ দিতে পারেন।
অতএব, বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিচালিত এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রদত্ত DNA পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়ানী মোকদ্দমায়, বিশেষ করে পিতৃত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে, সম্পূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্য।
youtube ভিডিও - আসন্ন বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি পরীক্ষা: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩