- Get link
- X
- Other Apps
বার কাউন্সিল ও জুডিশিয়াল সার্ভিস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি - পর্ব ৩
দখলের পুনরুদ্ধার (Recovery of Possession of Property) সংক্রান্ত:
স্থাবর সম্পত্তি: 'ক' এর জমি থেকে 'খ' তাকে বেআইনিভাবে উচ্ছেদ করেছে। 'ক' তার জমির দখল ফিরে পাওয়ার জন্য কি ধরনের মামলা করতে পারবে?
জোরপূর্বক দখলচ্যুতি: যদি কোনো ব্যক্তিকে তার সম্মতি ছাড়া এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে স্থাবর সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হয়, তবে সে কি শুধুমাত্র দখলের উপর ভিত্তি করে প্রতিকার চাইতে পারে?
অস্থাবর সম্পত্তি: 'ক' এর একটি মূল্যবান ঘড়ি 'খ' বেআইনিভাবে নিজের দখলে রেখেছে। 'ক' কি তার ঘড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য মামলা করতে পারবে?
আলোচনা
দখলের পুনরুদ্ধার (Recovery of Possession of Property) সংক্রান্ত আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর নিচে দেওয়া হলো:
১. স্থাবর সম্পত্তি: 'ক' এর জমি থেকে 'খ' তাকে বেআইনিভাবে উচ্ছেদ করেছে। 'ক' তার জমির দখল ফিরে পাওয়ার জন্য কি ধরনের মামলা করতে পারবে? (ধারা ৮, ৯)
স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধারের জন্য 'ক' দুই ধরনের মামলা করতে পারে:
১. সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ধারা ৯ অনুযায়ী মামলা: যদি 'ক' কে তার সম্মতি ছাড়া এবং যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতি অনুসরণ না করে স্থাবর সম্পত্তি থেকে দখলচ্যুত করা হয়, তাহলে তিনি এই ধারার অধীনে মামলা করতে পারেন। এই ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। এখানে আদালত শুধুমাত্র দখলের বিষয়টি বিবেচনা করেন, সম্পত্তির মালিকানা নয়। অর্থাৎ, কে মালিক তা এখানে মুখ্য নয়, মুখ্য হলো কে দখলচ্যুত হয়েছে। মামলাটি দখলচ্যুত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে দায়ের করতে হয়।
২. সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ধারা ৮ অনুযায়ী মামলা: এই ধারার অধীনে মামলা করার জন্য 'ক' কে তার মালিকানা প্রমাণ করতে হবে। অর্থাৎ, তিনি যে ওই সম্পত্তির প্রকৃত মালিক, তার প্রমাণপত্র (যেমন: দলিল, খতিয়ান ইত্যাদি) আদালতে পেশ করতে হবে। এই ধরনের মামলা করতে সময়ের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই, তবে সাধারণত ১২ বছরের মধ্যে করা হয়।
২. জোরপূর্বক দখলচ্যুতি: যদি কোনো ব্যক্তিকে তার সম্মতি ছাড়া এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে স্থাবর সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হয়, তবে সে কি শুধুমাত্র দখলের উপর ভিত্তি করে প্রতিকার চাইতে পারে? (ধারা ৯)
হ্যাঁ, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ধারা ৯ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে তার সম্মতি ছাড়া এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে স্থাবর সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হলে, সে শুধুমাত্র দখলের উপর ভিত্তি করে প্রতিকার চাইতে পারে। এখানে সম্পত্তির মালিকানা প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই। আদালত শুধু এই বিষয়টি বিবেচনা করবেন যে, ব্যক্তিটি দখলচ্যুত হয়েছে কিনা। এটি দ্রুত প্রতিকার পাওয়ার একটি উপায়।
৩. অস্থাবর সম্পত্তি: 'ক' এর একটি মূল্যবান ঘড়ি 'খ' বেআইনিভাবে নিজের দখলে রেখেছে। 'ক' কি তার ঘড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য মামলা করতে পারবে? (ধারা ১০, ১১)
হ্যাঁ, 'ক' তার ঘড়ি ফিরে পাওয়ার জন্য মামলা করতে পারবে। এই ধরনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ধারা ১০ এবং ১১ প্রযোজ্য।
ধারা ১০: এই ধারা অনুযায়ী, যার অস্থাবর সম্পত্তি আছে, সে তার দখল পুনরুদ্ধারের জন্য মামলা করতে পারে। এই মামলা করার জন্য বাদীকে প্রমাণ করতে হবে যে, তার ওই সম্পত্তির ওপর একটি অধিকার আছে।
ধারা ১১: এই ধারাটি সুনির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। যেমন:
যখন ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট প্রতিকার নয়। (যেমন: ঘড়িটি যদি এমন হয় যে, তার কোনো বিকল্প নেই বা এটি কোনো পারিবারিক স্মারক, তাহলে শুধু টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়)।
যখন সম্পত্তিটি ট্রাস্টির হাতে থাকে।
১. যখন সম্পত্তিটি এমন হয় যে, তার প্রকৃত ক্ষতি নিরূপণ করা কঠিন।
২. যখন সম্পত্তিটি বেআইনিভাবে হস্তান্তর করা হয়।
এই ধরনের মামলা সাধারণত ধারা ১০ এর অধীনেই করা হয়, তবে যদি উপরের বিশেষ পরিস্থিতিগুলো থাকে, তাহলে ধারা ১১ এর বিধানও প্রয়োগ করা যেতে পারে।