ভুল মানুষকে বিয়ে করলে আপনার করনীয়

ভুল মানুষকে বিয়ে করলে আপনার করনীয় কি?

ভুল মানুষকে বিয়ে করা জীবনের একটি অত্যন্ত কঠিন এবং বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা হতে পারে।

 এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব জটিল। এখানে কিছু পদক্ষেপ আলোচনা করা হলো যা আপনাকে এই কঠিন সময় মোকাবিলা করতে সাহায্য করতে পারে:

১. পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করুন

প্রথমে শান্তভাবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করুন। ভুলটা কোথায় হয়েছে, তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার সঙ্গীর কোন দিকগুলো আপনার কাছে "ভুল" মনে হচ্ছে? এই ভুলগুলো কি পরিবর্তনযোগ্য, নাকি মৌলিক ব্যক্তিত্বের অংশ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা আপনাকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

২. সঙ্গীর সাথে খোলামেলা কথা বলুন

অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝি বা যোগাযোগের অভাবে সমস্যা সৃষ্টি হয়। আপনার সঙ্গীর সাথে খোলামেলা এবং সৎভাবে কথা বলুন। আপনার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করুন এবং আপনার সমস্যাগুলো তুলে ধরুন। তার দিকটাও শুনুন। যদি দুজনেই সমস্যা সমাধানে ইচ্ছুক হন, তাহলে সম্পর্ক ভালো করার একটি সুযোগ থাকতে পারে।

৩. বৈবাহিক পরামর্শদাতার সাহায্য নিন

যদি আপনারা দুজনেই সম্পর্ক ভালো করতে চান, কিন্তু নিজেরা পথ খুঁজে না পান, তাহলে একজন বৈবাহিক পরামর্শদাতা (Marriage Counselor) এর সাহায্য নিতে পারেন। একজন নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষ আপনাদের মধ্যেকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে এবং যোগাযোগের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করতে পারেন।

৪. নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন

এই ধরনের পরিস্থিতিতে মানসিক চাপ, হতাশা এবং উদ্বেগ হওয়া স্বাভাবিক। নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সাথে কথা বলুন, আপনার পছন্দের কাজ করুন, অথবা প্রয়োজনে একজন মনোবিদ (Psychologist) এর সাহায্য নিন।

৫. ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করুন

যদি আলোচনার পরও কোনো উন্নতি না হয় এবং সম্পর্কটি আপনার জন্য বিষাক্ত হয়ে ওঠে, তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে চিন্তা করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন:

 * এই সম্পর্ক কি আমাকে খুশি করছে?

 * আমি কি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে প্রস্তুত?

 * বিচ্ছেদের পর আমার জীবন কেমন হবে?

৬. বিচ্ছেদের কথা ভাবুন

যদি সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং সম্পর্কটি আপনার জন্য আর সহনীয় না থাকে, তাহলে বিচ্ছেদই একমাত্র পথ হতে পারে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন, তবে কখনও কখনও এটি নিজের মানসিক শান্তি এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় হয়। এই প্রক্রিয়ায় আইনি সহায়তা নেওয়া উচিত। একজন আইনজীবী (Lawyer) আপনাকে বিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়া এবং আপনার অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন।

৭. নিজেকে সময় দিন

বিচ্ছেদের পর নিজেকে সুস্থ হওয়ার জন্য সময় দিন। এটি একটি শোক প্রক্রিয়া। নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হন এবং নিজের মতো করে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসুন।

৮. ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরেকবার ভেবে নিন 

মনে রাখবেন, প্রতিটি পরিস্থিতি ভিন্ন এবং আপনার সিদ্ধান্ত আপনার ব্যক্তিগত অবস্থা এবং অনুভূতির উপর নির্ভর করবে। একবার ডিভোর্স দিলে সেটাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই ডিভোর্স দেয়ার আগে খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। তাড়াহুড়ো না করে, ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।