- Get link
- X
- Other Apps
আসন্ন বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান
আসন্ন বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি। বিগত বছরের বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান। পরীক্ষা: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার। প্রশ্ন নং ৬ এর ক ও খ
৬। ক) কোন পারিপার্শ্বিকতায় কোনো ব্যক্তি কর্তৃক আইনবলে বাধ্য' বা 'আইনবলে প্রদত্ত ধারণায় সরল বিশ্বাসে সম্পাদিত কাজ ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রতিরক্ষা হিসাবে গণ্য হবে?
৬। খ) সমবায় সমিতির মালিকানাধীন একটি স্থাবর সম্পত্তি নিলামে নব্বই লাখ টাকায় Q খরিদ করেন। Y Z এর সাথে যোগসাজসে ঐ সমবায় সমিতির সেক্রেটারি X ঐ সম্পত্তির মূল্য চল্লিশ লাখ টাকা উল্লেখে Z এর অনুকূলে একটি জাল দলিল করেন মর্মে সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়। X, Y Z The Penal Code, 1860 এর কোন কোন ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত ও দণ্ডিত করা যেতে পারে? প্রাসঙ্গিক বিধান উল্লেখে উত্তর দিন।
৬। ক)
আইনবলে বাধ্য হয়ে বা সরল বিশ্বাসে সম্পাদিত কাজ ফৌজদারি অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা হতে পারে, যদি কাজটি তথ্যের ভুলের (Mistake of Fact) কারণে হয়, আইনের ভুলের (Mistake of Law) কারণে নয়, এবং সরল বিশ্বাসে (Good Faith) অর্থাৎ যুক্তিসঙ্গত যত্ন ও মনোযোগ সহকারে করা হয়। দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ধারা ৭৬ (আইনবলে বাধ্য) ও ধারা ৭৯ (আইনবলে সমর্থিত) এই বিধান দেয়।
দণ্ডবিধির ১৮৬০ এর ৭৬ এবং ৭৯ ধারার উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৭৬ ধারার উদাহরণ
ধারা ৭৬: আইনবলে বাধ্য একজন ব্যক্তির কাজ অথবা তথ্যের ভুলে সরল বিশ্বাসে নিজেকে আইনবলে বাধ্য মনে করে কোনো কাজ।
১. আইনবলে বাধ্য ব্যক্তির কাজ:
তথ্যের ভুলে সরল বিশ্বাসে নিজেকে আইনবলে বাধ্য মনে করা:
একজন পুলিশ অফিসার "ক", "খ" নামের এক ব্যক্তিকে একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করার জন্য একটি ওয়ারেন্ট পেল। "ক" যখন "খ" কে গ্রেপ্তার করতে গেল, তখন সে একজন অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখল যার চেহারা "খ" এর বর্ণনার সাথে হুবহু মিলে যায়। "ক" সরল বিশ্বাসে এবং প্রয়োজনীয় তদন্ত করে সেই অপরিচিত ব্যক্তিকে "খ" মনে করে গ্রেপ্তার করল। পরে জানা গেল, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি আসল "খ" নয়, বরং অন্য একজন নিরপরাধ ব্যক্তি। এই ক্ষেত্রে, পুলিশ অফিসার "ক" তথ্যের ভুলে সরল বিশ্বাসে নিজেকে আইনবলে বাধ্য মনে করে কাজ করায় কোনো অপরাধ করেননি।
দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৭৯ ধারার উদাহরণ
ধারা ৭৯: আইনবলে ন্যায়সঙ্গত একজন ব্যক্তির কাজ অথবা তথ্যের ভুলে সরল বিশ্বাসে নিজেকে আইনবলে ন্যায়সঙ্গত মনে করে কোনো কাজ।
১. আইনবলে ন্যায়সঙ্গত কাজ:
"ক" নামের একজন ব্যক্তি দেখলেন যে "খ" নামে একজন চোর দিনের বেলায় একটি বাড়িতে চুরি করছে। "ক" চোর "খ" কে দৌড়ে ধরে ফেলল এবং পুলিশের কাছে সোপর্দ করল। এখানে "ক" চোরকে আটক করে আইনবলে ন্যায়সঙ্গত কাজ করেছেন (অপরাধীকে ধরতে আইন তাকে অনুমতি দেয়)। তাই "ক" কোনো অপরাধ করেননি।
৬। খ) সমবায় সমিতির সম্পত্তি জালিয়াতির ঘটনায় X, Y এবং Z কে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর নিম্নলিখিত ধারাগুলোর অধীনে দোষী সাব্যস্ত ও দণ্ডিত করা যেতে পারে:
১. ফৌজদারি ষড়যন্ত্র (Criminal Conspiracy) - ধারা ১২০বি: X, Y এবং Z অবৈধ কাজ করার জন্য যোগসাজস করেছেন। যেহেতু এটি গুরুতর অপরাধের ষড়যন্ত্র, তাদের মূল অপরাধের শাস্তি প্রযোজ্য হবে।
২. জালিয়াতি (Forgery) - ধারা ৪৬৩, ৪৬৪, ৪৬৫ এবং ৪৬৮:
* ধারা ৪৬৩ ও ৪৬৪: X মিথ্যা দলিল তৈরি করেছেন Q কে ক্ষতিগ্রস্ত ও Z কে লাভবান করার উদ্দেশ্যে।
* ধারা ৪৬৫: সাধারণ জালিয়াতির শাস্তি।
* ধারা ৪৬৮: প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি (Forgery for purpose of cheating)। X, Y এবং Z এই ধারায় দোষী হবেন, যার শাস্তি সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ও জরিমানা।
৩. প্রতারণা (Cheating) - ধারা ৪২০: X, Y এবং Z জাল দলিলের মাধ্যমে Q কে প্রতারণা করে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছেন। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ও জরিমানা।
৪. বিশ্বাস ভঙ্গ (Criminal Breach of Trust) - ধারা ৪০৬ ও ৪০৯:
* ধারা ৪০৬: সেক্রেটারি হিসেবে X সমিতির সম্পত্তির বিশ্বাস ভঙ্গ করে তা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেছেন।
* ধারা ৪০৯: যেহেতু X বিশ্বস্ত পদে (সেক্রেটারি) ছিলেন, তাই এই ধারা প্রযোজ্য হতে পারে। এর শাস্তি যাবজ্জীবন বা ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা।
কারা কোন ধারায় দোষী:
* X (সেক্রেটারি): ১২০বি (ষড়যন্ত্র), ৪৬৮ (জালিয়াতি), ৪২০ (প্রতারণা) এবং ৪০৬ অথবা ৪০৯ (বিশ্বাস ভঙ্গ)।
* Y এবং Z: ১২০বি (ষড়যন্ত্র), ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) এবং ৪২০ (প্রতারণা)। এছাড়াও, ধারা ৩৪ (সাধারণ উদ্দেশ্য) অথবা ধারা ১০৯ (অপরাধে প্ররোচনা) এর অধীনেও তাদের দায়ী করা যেতে পারে।