- Get link
- X
- Other Apps
বার কাউন্সিল ও জুডিসিয়াল সার্ভিস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি - পর্ব ১৪
চরিত্র (Character) সংক্রান্ত:
একটি ধর্ষণের মামলায়, অভিযুক্ত পক্ষ অভিযোগকারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চায়। আদালত কি এই ধরনের প্রশ্ন তোলার অনুমতি দেবে? কোন পরিস্থিতিতে চরিত্র প্রাসঙ্গিক হতে পারে?
একজন সাক্ষী হিসেবে, পূর্ববর্তী ফৌজদারি রেকর্ড কি তার সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করতে পারে?
ফৌজদারি মামলায় সাক্ষীর চরিত্র এবং পূর্ববর্তী অপরাধ সংক্রান্ত সাক্ষ্যের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর সংশ্লিষ্ট ধারাগুলি নিচে আলোচনা করা হলো।
ধর্ষণের মামলায় অভিযোগকারীর চরিত্র
ধর্ষণের মামলায়, অভিযোগকারীর চরিত্র সাধারণত অপ্রাসঙ্গিক। বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ধারা ১৪৬ এবং ১৫৫(৪) অনুসারে, ধর্ষণের শিকার কোনো নারীর চরিত্র তার সম্মতির প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ, অভিযুক্ত পক্ষ এই যুক্তিতে অভিযোগকারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না যে তার চরিত্র খারাপ বলে তিনি সম্মতি দিয়েছিলেন। এই বিধানটি নারীর মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অভিযোগকারীর চরিত্র প্রাসঙ্গিক হতে পারে। যেমন:
যদি অভিযোগকারী নিজে তার চরিত্র নিয়ে ভালো সাক্ষ্য দেন, তবে অভিযুক্ত পক্ষ তা খণ্ডন করতে পারে।
![]() |
অভিযোগকারী নিজে তার চরিত্র নিয়ে ভালো সাক্ষ্য দেন, তবে অভিযুক্ত পক্ষ তা খণ্ডন করতে পারে |
যদি অভিযোগকারীর চরিত্র মামলার মূল ফ্যাক্ট (fact in issue) হয়, তবে তা প্রাসঙ্গিক হতে পারে। তবে ধর্ষণের মামলায় সম্মতি প্রমাণ করার জন্য এই ধারা ব্যবহার করা যাবে না।
পূর্ববর্তী ফৌজদারি রেকর্ড এবং সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা
একজন সাক্ষীর পূর্ববর্তী ফৌজদারি রেকর্ড তার সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করতে পারে। এটি বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইনের ধারা ১৫৩ এবং ধারা ১৪৬ এর অধীনে আলোচনা করা হয়েছে।
ধারা ১৪০: এই ধারা অনুসারে, একজন সাক্ষীকে পরীক্ষা, জেরা, এবং পুনর্পরীক্ষা করা যায়। জেরা করার সময় তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতে পারে।
ধারা ১৪৬: এই ধারায় বলা হয়েছে, জেরার সময় সাক্ষীকে এমন প্রশ্ন করা যেতে পারে যা তার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করার জন্য সহায়ক। যেমন:
১. তিনি কে এবং সমাজে তার অবস্থান কী।
২. তার চরিত্র কেমন।
৩. তিনি সত্যবাদী কিনা।
ধারা ১৫৩: এই ধারা অনুসারে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়, তবে তা প্রমাণ করার জন্য পূর্ববর্তী মিথ্যা সাক্ষ্য বা অসৎ চরিত্রের প্রমাণ দেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ, একজন সাক্ষীর পূর্ববর্তী ফৌজদারি রেকর্ড (বিশেষত যদি তা অসততা বা মিথ্যাচারের সাথে সম্পর্কিত হয়) তার সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করতে পারে। তবে, এই রেকর্ড সরাসরি তার সাক্ষ্যকে বাতিল করে না, বরং এটি আদালতের কাছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা মূল্যায়নের একটি ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে।
সংক্ষেপে, ধর্ষণের মামলায় অভিযোগকারীর চরিত্র সাধারণত অপ্রাসঙ্গিক। তবে সাক্ষীর পূর্ববর্তী ফৌজদারি রেকর্ড তার সাক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।