Skip to main content

Featured post

Natural Sweetener Swap Guide: Honey & Maple Syrup for Sugar in Baking

Bail Section 496 Law of Criminal Procedure যে সকল ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুর করা যাবে

Chapter XXXIX - Of Bail

উনচল্লিশতম অধ্যায় -জামিন বিষয়ে।

ধারা ৪৯৬ যে সকল ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুর করা যাবে

জামিনের অযােগ্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিত অন্য কোন ব্যক্তি গ্রেফতার হলে বা কোন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার হলে বা আটক থাকলে কিংবা আদালতে হাজির হলে বা তাকে হাজির করা হলে, সে যদি উক্ত কর্মকর্তার হেফাজতে থাকার সময় বা উক্ত আদালতের কার্যধারার কোন পর্যায়ে জামিন দিতে প্রস্তুত থাকে, তা হলে তাকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত কর্মকর্তা বা আদালত উপযুক্ত মনে করলে তার নিকট হতে জামানত গ্রহণের পরিবর্তে অতঃপর বর্ণিতভাবে হাজির হওয়ার নিমিত্তে জামিনদার ব্যতিত মুচলেকা সম্পাদন করলে তাকে মুক্তি দিতে পারবেন। তবে আরাে শর্ত থাকে যে, অত্র ধারার কোন বিধান ১০৭ ধারার (৪) উপ-ধারা কিংবা ১১৭ ধারার (৩) উপ-ধারার কোন বিধানকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করা হবে না।

জামিন সম্পর্কিত আলোচনা

জামিন করার পদ্ধতি (Procedure of making bail)

ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান অনুযায়ি আসামিকে গ্রেফতারের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে চালান বা হাজির করতে হয়। তাই গ্রেফতারকৃত আসামিকে থানা হতে আদালতের হাজতখানায় প্রেরণ করার পর আদালতে হাজির করা হয়। উল্লেখ্য যে, থানা হতে আদালতের হাজতখানায় আসামিদের প্রেরণ করার সময় হাজতখানায় আসামিদের (ক) জিআর মামলা ও (খ) নন-জিআর মামলা এই দুই তালিকায় ভাগ করা হয়। জিআর তালিকা হল আমলযােগ্য মামলার তালিকা, আর নন-জিআর তালিকা হল আমলযােগ্য নয় এমন মামলার তালিকা। এই তালিকাদ্বয়ের মামলাকে একত্রে প্রডাকশন মামলা বলে। তালিকাগুলােতে আসামির নাম, পিতার নাম, মামলার নম্বর, থানার নাম ইত্যাদি লেখা থাকে।

আইনজীবী থানা হতে মামলার নম্বর ও আসামিদের সকলের নাম না জানতে পারলে আদালতের হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জেনে নিতে পারবেন, প্রয়ােজনবােধে আইনজীবী হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি গ্রহণপূর্বক আসামির সাথে দেখা করতে পারেন। তারপর জিআরও সেকশন বা নন-জিআরও সেকশনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অনুরােধ করে মামলার এজাহার ও ফরােয়ার্ডিং হতে দায়েরকারি তথ্যাবলি গ্রহণপূর্বক আসামির জামিন প্রার্থনার জন্য মুসাবিদা তৈরী করতে হবে। উল্লেখ আবশ্যক যে, এজাহার ও ফরােয়ার্ডিং এর নকল সংগ্রহ করা উচিত। কারণ এজাহারে পুলিশের বক্তব্য এবং আসামির রিমান্ড প্রার্থনা করলে ফরােয়ার্ডিং এর বাম পার্শ্বের মার্জিন হতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সুপারিশ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে অবগত হওয়া যায়। আবার ফৌজদারি মামলার আসামির জামিনের ক্ষেত্রে এজাহারে পুলিশের বক্তব্য ও ফরােয়ার্ডিং এর মন্তব্য সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ, বিধায় জামিনের দরখাস্ত করার সময় এজাহার ও ফরােয়ার্ডিংকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।

সকল এফআইর ফরম এবং এজাহার থানা হতে প্রথমে আদালতের হাজতখানায় ও পরবর্তীতে ডেসপাস সেকশন হতে জিআরও এবং নন-জিআরও সেকশনে যায়। তবে ফরােয়ার্ডিং ও অন্যান্য প্রতিবেদন থানা হতে প্রথমে আদালতের হাজতখানায় প্রেরীত হয় ও সেখান হতে সরাসরি জিআরও সেকশনে প্রেরীত হয়। আইনজীবীকে আসামির পক্ষে জামিন করার জন্যে প্রথমেই আসামি হতে ওকালতনামা স্বাক্ষর করিয়ে নিতে হবে। আসামির কাছ থেকে ওকালতনামায় স্বাক্ষরের লক্ষ্যে আদালতের হাজতখানার দায়িত্বরত কনষ্টেবলের নিকট ওকালতনামাটি দিলে তিনি আসামির কাছ হতে উহা স্বাক্ষর করিয়ে এনে দেবেন। কনষ্টেবল এতে আসামির দস্তখত গ্রহণের জন্য তা হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট দাখিল করার পর তিনি এতে আসামির দস্তখতের নীচে “সত্যায়িত” লিখাপূর্বক সীল-স্বাক্ষর করতঃ তার উল্টো পিঠে কনষ্টেবলের নাম লিখে পুনরায় কনষ্টেবলের কাছে ফেরত দিয়ে দেন।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অনেক ক্ষেত্রে নিজেই হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি গ্রহণপূর্বক ওকালতনামায় আসামির স্বাক্ষর করিয়ে আনেন। এরূপ ক্ষেত্রে উক্ত কর্মকর্তা পূর্বোক্ত উপায়ে ওকালতনামায় সীল-স্বাক্ষর করতঃ শুধু কনষ্টেবলের পরিবর্তে কথাটি লিখেন। অর্থাৎ বিজ্ঞ আইনজীবী স্বাক্ষর করিয়েছেন। অতঃপর থানার পুলিশ কর্তৃক আসামিকে রিমান্ডে নেবার সুপারিশ থাকলে উক্ত রিমান্ড বাতিলের আবেদন করে আসামির জামিনের দরখাস্ত দিতে হবে বা রিমান্ডের প্রার্থনা না থাকলে শুধু আসামির জামিনের আবেদন করাই যথেষ্ট। উল্লেখ্য যে, জামিনের দরখাস্তের সাথে ওকালতনামা জমা দেয়া আবশ্যক এবং এতদসঙ্গে নির্ধারিত কোর্ট ফি দিতে হবে। পরিশেষে জামিনের দরখাস্তটি জিআরও সেকশনে জমা দিয়ে, পরবর্তীতে জিআরও সেকশন হতে জেনে নিতে হবে যে, নির্ধারিত আদালতে জামিনের দরখাস্তটি কখন পেশ করা হবে।আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করলে জামিননামা বা বেইলবন্ড প্রস্তুত করে বিজ্ঞ আইনজীবীকে আদালতে জমা দিতে হবে।

বেইলবন্ড কাকে বলে (What is Bail bond)

আসামি কোর্ট হাজতে থাকা অবস্থায় আদালত যদি আসামির জামিন মঞ্জুর করে তবে, প্রথমেই আইনজীবীকে মামলা রেকর্ডের দিকে লক্ষ্য রেখে ও আদালতের আদেশত একটি জামিননামা ও একটি রিকল বা মুক্তিনামা যথাযথভাবে পূরণ করে জিআর সেকশনে জমা দিতে হবে। প্রকাশ থাকে যে, বেইলবন্ডে ‘ল’ ইয়ার সিকিউরিটি ও একজন স্থানীয় লােকাল সিউরিটির নাম ও স্বাক্ষর থাকতে হবে। জিআর সেকশন থেকে মামলার নথিটি পিআরও সেকশনে নিয়ে গিয়ে পিআর করাতে হবে। পিআরও বা প্রপারটি রেজিষ্ট্রেশন কর্মকর্তার নিকট রক্ষিত রেজিষ্ট্রারে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও মেট্রোপলিটন আইনজীবী সমিতির আইনজীবীগণের নাম ও তাদের কে কত টাকায় সর্বোচ্চ জামিনদার হতে পারবেন তার বিবরণ রয়েছে। পিআরও বেইলবন্ডে উল্লেখিত সকল তথ্য যাচাইপূর্বক জামিননামার স্থানীয় জামিনদার, ‘ল’ ইয়ার জামিনদার সঠিক রয়েছে মর্মে বিবেচনা করলে জামিননামার বাম পাশে তারিখসহ সীল স্বাক্ষর করবেন। অতঃপর পিআরও হবার পরে সিএফ (কারেক্টলি ফার্নিসড) করার জন্যে নথিটি জিআর সেকশনে নিয়ে যাওয়া হয়। মামলার নথি ও বেইলবন্ড জিআরও কর্তৃক যাচাই হবার পর তিনি নিজে বা তার অধীনস্থ কোন কর্মচারীর দ্বারা মামলার নথির অর্ডার শীটে বেইলবন্ড প্রদানের বিষয়টি লিপিবদ্ধ করবেন এবং জামিননামার ঠিক মধ্যভাবে "Verified” শব্দটি লিখে তার নীচে তারিখসহ সীল স্বাক্ষর করবেন। অতঃপর জিআর সেকশন হতে মামলার নথিসহ বেইলবন্ড ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পাঠানাে হলে ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমেই মামলার অর্ডারশীট পড়বেন এবং তাতে মুক্তিনামায় উল্লেখিত “চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ডাক” লেখা আছে তার উপর স্বাক্ষরপূর্বক তিনি বেইলবন্ডের ডানদিকে “গৃহীত হল” শব্দের পাশে তার সীল মােহরে ইনিশিয়াল করবেন। অতঃপর তা জিআর সেকশনে আসলে জিআরও বেইলবন্ড ও মুক্তিনামায় উল্লেখিত বিষয়াবলি সঠিক পেলে তারিখসহ সীলস্বাক্ষর করতঃ মামলার নথিটি ডেসপাস সেকশনে পাঠাবেন। ডেসপাস সেকশনে দায়িত্বরত এসআই মুক্তিনামাকে জামিননামা হতে আলাদা করে মুক্তিনামার উপর এন্ট্রি নম্বর দিয়ে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করে তাতে মেমাে নম্বর বা টোকেন নম্বর দেবেন। ডেসপাস সেকশন হতে মুক্তিনামা জামিননামাসহ মামলার নথি কোর্ট হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট পাঠানাে হবে। তবে এরূপ ক্ষেত্রে অনেক সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মামলার নথি ও জামিননামাকে কোর্ট হাজতের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট না প্রেরণ করে শুধুমাত্র মুক্তিনামাটিকে পাঠিয়ে দেন এবং মামলার নথি ও জামিননামা জিআর সেকশনে প্রেরণ করেন। মুক্তিনামাটি পাবার পরে কোর্ট হাজতের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসামিকে সনাক্ত করে মুক্তি দেবেন।

প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন (Bail from the Court of 1st Class Magistrate)

আসামি গ্রেফতারের পর তার আত্মীয়-স্বজন তার জামিনের ব্যবস্থা করার জন্যে আইনজীবীর কাছে আসেন। আইনজীবী কর্তৃক এরূপ সংশ্লিষ্ট আত্মীয়স্বজনকে প্রশ্ন করে ভালভাবে জানতে হবে কোন থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে, মামলার নম্বর পেয়েছে কিনা, অন্য কোন আসামি আছেন কিনা, থাকলে তাদের জামিন আছে কিনা। তারা উপরিউক্ত কিছুই ভালভাবে বলতে না পারলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে আসামির নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা লিখে কোর্ট হাজতখানায় রক্ষিত কাষ্টডি রেজিষ্ট্রার হতে সংশ্লিষ্ট থানার নামের নীচে আসামির নাম ও আসামির পিতার নাম খুঁজে বের করতে হবে। জিআর বা নন-জিআর যে মামলায়ই আসামি গ্রেফতার হােক না কেন অবশ্যই কাষ্টডি রেজিষ্টারে তার নাম পাওয়া যাবে। এভাবে আসামির নাম সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট মামলার নম্বরসহ জিআর সেকশনে গিয়ে সেখান থেকে মামলার নথিটি নিবেন। সেখানে মামলার এজাহারের একটি হাত কপি বা অন্য কোনভাবে কপি করিয়ে নিতে হবে। ফরােয়ার্ডিং থেকে আবশ্যকীয় নােট নেবেন ও অর্ডারশীটে পরে প্রয়ােজনবােধ করলে নােট দেবেন। আসামির কাছ হতে Power না পেলে আইনজীবীর পক্ষে মামলার মুভ করা কঠিন হয়, বিধায় আইনজীবী ওকালতনামায় আসামির স্বাক্ষর করিয়ে নিতে হবে। যদি আসামি কোর্ট হাজতে থাকে তবে আইনজীবী কোর্ট হাজতে গিয়ে ওসি সাহেবের অনুমতি গ্রহণপূর্বক আসামির স্বাক্ষর ওকালতনামায় নিতে পারেন। ওসি সাহেবকে দিয়ে উক্ত স্বাক্ষরটি সত্যায়িত করে নিতে হবে। আবার আসামি যদি জেল হাজতে না থাকে তবে আসামির মামলা-তদবীরকারিদের দিয়ে জেলা হাজত থেকে ওকালতনামায় আসামির স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে হবে। এক্ষেত্রে জেল গেটে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কনষ্টেবল থেকে‌ ওকালতনামাটিতে আসামির স্বাক্ষর গ্রহণের বিষয়ে সহযােগিতা নেয়া যেতে পারে। এভাবে ওকালতনামা প্রাপ্তির পর কর্মরত আইনজীবী দরখাস্ত তৈরী করতে ওকালতনামা ও কোর্ট ফি লাগাবেন। এ পর্যায়ে পিটিশন মামলার ক্ষেত্রে জামিনের দরখাস্তটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার বরাবরে দিতে হবে। পেশকার মামলার নথি বের করে তাতে জামিনের দরখাস্তটি এন্ট্রি করবেন। আবার পুলিশী মামলার ক্ষেত্রে জিআর সেকশনে জামিনের দরখাস্তটি জমা দেয়ার পর জিআরও মামলার রেকর্ড বের করে জামিনের দরখাস্তটি এন্ট্রি করবেন। তারপর সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সময়মত জামিনের দরখাস্তের শুনানি করতে হবে।

সুতরাং দেখা যায়, সারেন্ডার করে আসামির জামিনের ক্ষেত্রে প্রথমে আসামির কাছ হতে ওকালতনামায় স্বাক্ষর গ্রহণ নিতে হবে। পিটিশন মামলার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকারের নিকট তা জমা দিতে হবে। আর জিআর কেস বা পুলিশ কেসের ক্ষেত্রে আইনজীবীকে জামিনের দরখাস্তটি জিআর সেকশনে জমা দিতে হবে। অতঃপর আইনজীবী কর্তৃক জামিনের দরখাস্তটি শুনানি করতে হবে। সর্বোপরি আদালত জামিন মঞ্জুর না করলে সাথে সাথে আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে। আর জামিন যদি মঞ্জুর করা হয় তবে বেইলবন্ড সম্পাদিত না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে আদালতে আটক থাকতে হবে।

দায়রা জজ আদালতে জামিন করার পদ্ধতি (Procedure of making bail in the Court of Sessions):

অনেক সময় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামির জামিন প্রার্থনা করা সত্বেও জামিন পাওয়া যায়না। এরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে প্রয়ােজনবােধে দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করতে হবে। যে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আসামির জামিন নামঞ্জুর হয়েছে সেই কোর্ট যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করতে হবে এবং জামিনের জন্য দায়রা জজ আদালতে এরূপে মামলা দায়ের করা হলে তাকে সিআর মিস কেস বলা হয়। এতদুপায়ে সিআর মিস মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে এর সাথে মামলা বিষয়ক যে প্রয়ােজনীয় দলিলাদি বা কাগজপত্র আদালতে দাখিল করতে হবে তা হবে,

ক) যে সিএমএম কোর্ট বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামির জামিন নামঞ্জুর হয়েছে সেই আদালতের জামিন নামঞ্জুর আদেশের সহিমােহরী নকল কপি,

খ) প্রয়ােজনমত এজাহার ফরােয়ার্ডিং রিমান্ড প্রেয়ার,

গ) মেডিকেল রিপাের্ট,

ঘ) চার্জশীট প্রদান করা হলে তাদের সহিমােহরী নকল ইত্যাদি। আসামি জেল হাজতে থাকলে জেলখানায় গিয়ে ওকালতনামায় আসামির স্বাক্ষর (জেলখানায় অফিসার দ্বারা সত্যায়িত) নিতে হবে।

এভাবে প্রস্তুতকৃত জামিনের দরখাস্তটি দায়রা জজ আদালতের প্রধান পিওনের কাছে জমা দিতে হবে এবং জমাকৃত দরখাস্তটি কোর্ট পিওন তার উপর একপাতা অর্ডারশীট লাগিয়ে আদালতের ফাইলিং সিল মেরে এসিসট্যান্ট জামিনের দরখাস্তটি পাবার পর তা কোর্ট ফিস রেজিষ্টারে কোর্ট ফিস এন্ট্রি করার পর অর্ডারশীটের উপর একটি সিরেল নম্বর বা সিআর মিস নম্বর দেবেন। এরপর পেশকার বা তার ডিলিং এসিসট্যান্ট মামলাটিকে রেজিষ্ট্রিভুক্ত করতঃ জামিনের দরখাস্তটি সিআর মিস মামলার রেকির্ডভুক্ত করবেন। আদালতে মামলা উঠলে আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের দরখাস্তটি মুভ করতঃ শুনানির লক্ষ্যে একটি তারিখ আদালতের কাছে প্রার্থনা করবেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এডইনটারিম বেইল বা অন্তর্বর্তীকালিন জামিনের আবেদন করতে পারেন। এ পর্যায়ে আদালত জামিন মঞ্জুর করলে তাকে ad interim bail বলা হবে এবং ad interim bail দেবার তারিখের বিজ্ঞ আদালত বেইল কনফারমেশনের শুনানি গ্রহণের লক্ষ্যে একটি তারিখ ধার্য করবেন। আসামিকে বেইল কনফারমেশন শুনানির তারিখে আদালতে হাজির থাকতে হবে এবং আইনজীবীকে জামিন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আদালতের কাছে বক্তব্য পেশ করতে হবে। শুনানি অন্তে আদালত কর্তৃক জামিন নিশ্চিত করা হলে সিআর মিস কেসের আর কোন পেনডেনসি থাকে না।

কোর্ট ট্রান্সফার হলে জামিন করার পদ্ধতি (Bail in case of transfer of case from one Court to another):

এক আদালত হতে অন্য আদালতে ফৌজদারি মামলা ট্রান্সফার হলেই আসামির নতুন করে জামিন করিয়ে দিতে হয়। যদি আসামির বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করা হয় তবে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (জেনারেল) আদালত নিজে উক্ত মামলাটি যদি বিচার না করেন তবে মামলাটি দায়রা জজ কোর্টে বা তার অধীনস্থ কোন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করবেন। মামলাটি বদলীর মাধ্যমে বিচারার্থ যে আদালতে প্রেরিত হয় সেই আদালতকেই ট্রায়াল কোর্ট বলা হয়। ট্রায়াল কোর্টে অবশ্যই পূর্ববর্তী কোর্টে জামিনপ্রাপ্ত আসামির জামিন নতুন করে নিতে হবে। যদি ট্রায়াল কোর্ট জামিন মঞ্জুর করে তাহলে অবশ্যই বেইল বন্ড আসামিপক্ষকে দিতে হবে।

ট্রায়াল কোর্টে জামিন করার পদ্ধতি (Bail in trial Court)

ট্রায়াল কোর্ট বলতে মামলার বিচারকারি আদালতকেই বুঝানাে হবে। ট্রায়াল কোর্টে জেলা হাজতে বন্দী আসামির জামিন হতে নিতে হলে যে কোন দিনই জামিনের আবেদন করা যায় । ট্রায়াল কোর্ট যদি দায়রা জজ কোর্ট হয় তবে পিপি বা এপিপি সাহেবের কাছে জামিনের দরখাস্তটি দাখিল করার পর তার মন্তব্য লিপিবদ্ধ করে নিতে হবে। পিপি সাহেব অবস্থামত উক্ত দরখাস্তে দেখলাম অথবা আপত্তি বা Objected to মন্তব্য করে লিখে দেন। অতঃপর শুনানির সময় পিপি বা এপিপি সাহেবকে শুনানিতে অংশ গ্রহণ করার জন্য অনুরােধ জানাতে হবে। উক্ত দরখাস্ত আদালতের পেশকারের নিকট দাখিল করতে হবে অর্থাৎ আদালতের পেশকারের কাছে দরখাস্তটি পুট আপের অনুমতি পাবার পর দরখাস্তটি মামলার রেকর্ডভুক্ত হয়েছে মর্মে বিবেচিত হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জামিনের শুনানি করতঃ পিপি বা এপিপি কিংবা সিএসআই জামিনের বিরােধিতা করে বক্তব্য পেশ করবেন। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি গ্রহণ করার পর যদি জামিন মঞ্জুর করে তবে নিয়মানুযায়ি ৰেইল বন্ড দিতে হবে। 

জামিন আদেশের পর কোর্ট অফিসারের দায়িত্ব- পিআরবি-৪৭৭ নিয়ম মােতাবেক, জামিন আদেশের পর কোর্ট অফিসারের দায়িত্ব নিম্নরূপ হয়ে থাকে

ক) কোর্ট অফিসার জামিননামা ও মুচলেকা প্রস্তুত করবেন এবং যথাযথভাবে সম্পাদন করবেন।

খ) মুচলেকা যথােচিতভাবে প্রস্তুত করা ও সম্পাদন করার লক্ষ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ জারি হওয়ার পর এ সকল মুচলেকা সম্পাদন করার জন্য যেসব সাক্ষী, মামলার পক্ষসমূহ ও জামানতের প্রয়ােজন তা কোর্ট অফিসে হাজির করতে হবে।

গ) কোর্ট অফিসার প্রস্তাবিত জামানতের গ্রহণযােগ্যতার বিষয়ে সতর্কতার সাথে অনুসন্ধান করবেন। যদি তার গ্রহণযােগ্যতায় কোন আপত্তি থাকে তবে তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে জানাতে হবে।

ঘ) কোন অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পন করার ক্ষেত্রে বা জামিনে মুক্তিলাভ করার ক্ষেত্রে কোর্ট অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ সম্বলিত জামিননামার একটি সার্টিফাইড নকল উক্ত আসামিকে বিনামূল্যে সরবরাহ করবেন।

এ আদেশটি সংশ্লিষ্ট থানায় না পৌছান পর্যন্ত একটি রক্ষাকবচ হিসেবে গণ্য করা হবে। যদিও যতশীঘ্র সম্ভব কোর্ট অফিসারের মুক্তির আদেশনামাটি থানায় পাঠিয়ে দেয়া উচিত। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক কোন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়ে যাবার পর সংশ্লিষ্ট অংশ উক্ত রেজিষ্ট্রার হতে কেটে দিতে হবে। কোন জামিনদারের মুচলেকা বাজেয়াপ্ত হয়ে গেলে সে পরিস্থিতিতে পুলিশ তার নিকট হতে বাজেয়াপ্ত হওয়া মুচলেকার অর্থ আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যক্তিকে অতঃপর আর কোন আসামির জামিনদার হতে আপত্তি করবেন। যদি কোন জামিনদারের মুচলেকা একবারের বেশী বাজেয়াপ্ত হয়, তাহলে কোর্ট অফিসার এ জামিনদারের নিকট হতে আর কোন মুচলেকা গ্রহণ না করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুরােধ জানাতে পারবেন। 

জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিকে আবার কখন গ্রেফতার করা যায় এবং কোন আদালত গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারেন (When a released accused on bail be rearrested/which court may order the arrest of a persons)

জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিকে আবার কখন গ্রেফতার করা যায়।

জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিকে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে জামিন বাতিল করে পুনরায় গ্রেফতার করা যেতে পারে।

ক) যেক্ষেত্রে জামিনপ্রাপ্ত ব্যক্তি মুক্ত থাকাকালিন একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে নিজকে জামিনের অযােগ্য করে তােলে।

খ) যেক্ষেত্রে জামিনে থাকাকালিন ঘটনার তদন্তের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে;

গ) যেক্ষেত্রে সাক্ষীদের ভয় দেখায় এবং সাক্ষ্য না প্রদানের চেষ্টা করে।

ঘ) যেক্ষেত্রে সে বিদেশে পলায়ন করে বা আত্মগােপন করে বা জামিনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়;

ঙ) যেক্ষেত্রে জামিনপ্রাপ্ত ব্যক্তি ধ্বংসাত্মক কাজ করে বা পুলিশের বিরুদ্ধে বা বিবাদী পক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশােধ নেয়ার চেষ্টা করে।

কোন আদালত জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিকে পুনরায় গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারেন

ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা-৪৯৭(৫) এবং ৫৬১(ক) মােতাবেক, হাইকোর্ট বিভাগ কিংবা দায়রা আদালত এবং নিজে মুক্তি দিয়ে থাকলে, অপর কোন আদালত এই ধারার অধীন মুক্তিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করাতে ও তাকে হাজতে প্রেরণ করতে পারবেন। ভুলবশত, প্রবঞ্চনাবশতঃ বা অন্য কোনভাবে অপর্যাপ্ত জামানত গ্রহণ করা হলে, বা তা পরে অপর্যাপ্ত হয়ে পড়লে জামিনে মুক্ত ব্যক্তিকে হাজির করবার নির্দেশ দিয়ে আদালত গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট প্রদান করতে পারবেন এবং পর্যাপ্ত জামানত সংগ্রহ করতে বলবেন।এবং সংগ্রহ করতে না পারলে তাকে জেলে প্রেরণের আদেশ দিতে পারবেন।

ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা-৫০২(৩) ধারা মােতাবেক, যদি ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা-৫০২(১) মােতাবেক আবেদন পাওয়া যায় এবং ধারা-৫০২(২) অনুযায়ি গ্রেফতারী পরােয়ানা অনুসারে উক্ত ব্যক্তি হাজির হয় কিংবা সে স্বেচ্ছায় আত্মসমপর্ণ করে, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট মুচলেকাখানি সম্পূর্ণ কিংবা আবেদনকারির সাথে সংশ্লিষ্ট অংশ বাতিল করবেন, এবং উক্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত অন্য জামিনদার সংগ্রহ করতে বলবেন, এবং সে যদি সংগ্রহ করতে না পারে তাহলে তাকে জেলে প্রেরণ করবেন।

জামিনযােগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে জামিন একটি অধিকার

ধারা ৪৯৬ ও ৪৯৭ এ যে আইন লিপিবদ্ধ হয়েছে তা সকল আদালত কর্তৃক ব্যবহার্য হতে হয়। এমনকি হাইকোর্ট ও দায়রা জজ আদালতকেও যখন উক্ত আদালত কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন অনুমােদনের বা বাতিলের আদেশ দেন। সার্টিফিকেট ডেটরকে সরকারি পাওনা আদায় আইনের ধারা ২৬ এর আওতায় আটক করা হলে তার মােকদ্দমায় ধারা ৪৯৬ এর বিধান প্রযােজ্য নয়। কাজেই তার জামিনদারের বিরুদ্ধে ধারা ৫১৪ এর আওতায় কার্যধারা গ্রহণ করা যাবে না।

জামিনযােগ্য অপরাধসমূহ

‘জামিন’ অভিব্যক্তিটির মৌলিক ধারণা হল, যেকোন ব্যক্তিকে পুলিশ কাষ্টডি হতে প্রতিশ্রুতি দাতার হাতে অর্পণ এবং উক্ত প্রতিশ্রুতিদাতা এমন ব্যক্তি যিনি আদালত যখনই প্রয়ােজন মনে করেন তখনই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে উপস্থিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

ধারা ৪৯৭ যখন জামিনের অযােগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুর করা যাবে

১) জামিনের অযােগ্য অপরাধে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি গ্রেফতার হলে বা কোন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক বিনা ওয়ারেন্টে আটক থাকলে বা আদালতে হাজির হলে বা তাকে হাজির করা হলে, তাকে জামিনে মুক্তি প্রদান করা যেতে পারে, কিন্তু সে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোন অপরাধে দোষী বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকলে তাকে এইরূপে মুক্তি দেওয়া যাবে না।‌তবে শর্ত থাকে যে, আদালত এইরূপ দোষে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি ষোল বৎসরের নিম্ন বয়স্ক‌ বা স্ত্রীলােক বা পীড়িত বা অক্ষম হলে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

২) তদন্ত, ইনকোয়ারি বা বিচারের কোন পর্যায়ে উক্ত কর্মকর্তা বা আদালতের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে আসামি জামিনঅযােগ্য কোন অপরাধ করেছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিযুক্ত কারণ নাই, তবে তার দোষ সম্পর্কে আরও তদন্তের যথেষ্ট ভিত্তি রহিয়াছে, তা হলে অনুরূপ তদন্ত সাপেক্ষে আসামিকে জামিনে, অথবা উক্ত কর্মকর্তা বা আদালতের ইচ্ছানুসারে সে অতঃপর বর্ণিত হাজির হওয়ার জন্য জামিনদার ব্যতিত বণ্ড সম্পাদন করলে তাকে মুক্তি দিতে পারবেন।

৩) কোন কর্মকর্তা বা আদালত (১) উপ-ধারা কিংবা (২) উপ-ধারার অধীন কোন ব্যক্তিকে মুক্তি দিলে তার ঐরূপ করার কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।

৪) জামিনের অযােগ্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার সমাপ্ত হওয়ার পর এবং রায় প্রদানের পূর্বে কোন সময় আদালত যদি মনে করেন যে, আসামি উক্ত অপরাধে দোষী নহে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিযুক্ত কারণ রহিয়াছে, তা হলে আসামি কারাগারে থাকলে রায় শ্রবণের উদ্দেশ্যে হাজির হওয়ার জন্য জামিনদার ব্যতিত বণ্ড সম্পাদনের পর তাকে মুক্তি দিবেন।

৫) হাইকোর্ট বিভাগ কিংবা দায়রা আদালত এবং নিজে মুক্তি দিয়া থাকলে, অপর কোন আদালত এই ধারার অধীন মুক্তিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি গ্রেফতার করাইতে ও তাকে হাজতে প্রেরণ করতে পারবেন।

জামিন অযােগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুরের সম্পর্কিত আলােচনা ও প্রয়ােগ

জামিন অযােগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুরের পদ্ধতি- ধারা ৪৯৭৪

৪৯৭ ধারায় যখন জামিনে মুক্তি পাবে

১। জামিনের অযােগ্য অপরাধে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি গ্রেফতার বা কোন থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার দ্বারা বিনা ওয়ারেন্টে আটক থাকলে বা আদালতে উপস্থিত হলে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। এটা আদালতের স্বেচ্ছাধীণ ক্ষমতা।

২। মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেতে পারে যদি-

ক) অভিযুক্ত ব্যক্তির বয়স ১৬ বছরের কম হয়

খ) অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী লােক হয় বা

গ) অভিযুক্ত ব্যক্তি অসুস্থ বা অক্ষম হয়।

এটা আদালতের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা

৩। তদন্ত বা অনুসন্ধানের সময় যদি তদন্ত কর্মকর্তা বা আদালত বুঝতে পারেন যে আসামি জামিন অযােগ্য অপরাধ করেছে বলে বিশ্বাস করার কোন যুক্তি যুক্ত কারণ নাই তাহলে আসামি জামিন পাবেন। এই ক্ষেত্রে জামিন না দেওয়া আদালতের জন্য আদেশসূচক।

৪। বিচার সমাপ্তির পর এবং রায় ঘােষণার পূর্বে আদালত যদি মনে করেন আসামি‌ নির্দোষ হওয়ায় যুক্তিযুক্ত কারণ আছে, তাহলে আসামি জামিন পাবেন।

৪৯৭ ধারায় যখন আসামি মুক্তি পাবেন না

জামিনে অযােগ্য অপরাধে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি গ্রেফতার বা কোন থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার দ্বারা বিনা ওয়ারেন্টে আটক থাকলে বা আদালতে উপস্থিত হলে যদি দেখা যায় যে অভিযুক্ত আসামি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে শাস্তিযােগ্য কোন অপরাধে দোষী হতে পারে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে তাহলে তাকে জামিনে মুক্তি প্রদান করা যাবে না। এই ক্ষেত্রে জামিন না দেওয়া আদালতের জন্য আদেশসূচক।

জামিন সম্পর্কিত নােট

হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা আদালত এবং নিজে মুক্তি দিয়ে থাকলে অন্য কোন আদালত ৪৯৭ ভাবানুসারে মুক্তিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে ও তাকে হাজতে প্রেরণ করতে পারবেন।

জামিন সম্পর্কে আরাে কিছু বিধান

১। মামলার তদন্ত যদি ১২০ দিনের মধ্যে শেষ না হয় তাহলে আসামি জামিনে মুক্তি পেতে পারেন। [ধারা- ১৬৭(৫)]।

২। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৮০ দিনে বা দায়রা আদালত ৩৬০ দিনের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করতে না পারলে আসামি জামিন পেতে পারে। (ধারা- ৩৩৯সি]।

৩। মানসিকভাবে অসুস্থ আসামি জামিন পাবেন। [ধারা-৪৬৬]।

৪। আপিল পেন্ডিং থাকলে আসামি জামিন পেতে পারেন [ধারা- ৪২৬(১)]।

৫। যদি দণ্ড ১ বছরের বেশি না হয় তাহলে আপিলকারিকে আদালত জামিনে মুক্তি দিবে। [ধারা- ৪২৬(২)] ।

৬। নাম ঠিকানা প্রদান করতে অস্বীকার করার কারণে গ্রেফতার কৃত ব্যক্তিকে পুলিশ জামিন দিতে পারে। [ধারা- ৫৭(২)]।

৭। বেসরকারি ব্যক্তি কর্তৃক আটক ব্যক্তি কে পুলিশ তৎক্ষণাত মুক্তি দিতে পারেন। [ধারা- ৫৯(৩)]।

৮। আসামিকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিচারের জন্য পাঠানাের দরকার মনে না করলে তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে জামিন দিতে পারেন। [ধারা- ১৬৯]।

৯। সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যাপ্ত থাকার পরও যদি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেখেন অপরাধটি জামিনযােগ্য তাহলে জামিননামা বা মুচলেকা নিয়ে জামিন দিতে পারে। [ধারা-১৭০]।

১০। আটক ব্যক্তিকে যদি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থিত করা হয় এবং ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন অপরাধটি জামিনযােগ্য এবং গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি জামানত প্রদান করতে ইচ্ছুক তাহলে সে জামিন পাবেন। [ধারা- ৮৬(১)]।

১১। হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা জজ নিম্ন আদালতের থেকে নথি তলব করার সময় শাস্তি কার্যকরণ স্থগিত রাখার সাথে আটক আসামিকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন। [ধারা- ৪৩৫(১)]।

১২। ওয়ারেন্ট প্রয়ােগকারি অফিসার বা পুলিশ অফিসার গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে মুচলেকা নিয়ে জামিন দিতে পারে। [ধারা- ৭৬]।

ধারা ৪৯৮ জামিন মঞ্জুর করার এবং অর্থের পরিমাণ হ্রাসের ক্ষমতা

এই অধ্যায়ের অধীন সম্পাদিত প্রত্যেক বন্ডের অর্থের পরিমাণ মামলার যথাযথ পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্ধারণ করতে হবে এবং তা অত্যাধিক হবে না, এবং শাস্তির পর আপিল থাকুক বা না থাকুক হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা আদালত যে কোন ক্ষেত্রে যে কোন ব্যক্তিকে জামিন মঞ্জুর করার বা পুলিশ কর্মকর্তা বা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক দাবিকৃত জামানত হ্রাস করার আদেশ দিতে পারেন।

আলােচনা ও প্রয়ােগ

আগাম জামিন কাকে বলে (What is Anticipatory Bail)

আটক বা গ্রেফতারের আশংকা আছে এমন ব্যক্তির গ্রেফতার হবার পূর্বেই জামিন মঞ্জুর করলে তাকে আগাম জামিন বলে।

ধারা ৪৯৯ আসামি ও জামিনদারের বও

১) কোন ব্যক্তিকে জামিনে বা তার নিজের বন্ডে মুক্তি দেওয়ার পূর্বে উক্ত ব্যক্তি পুলিশ কর্মকর্তা বা আদালত যেইরূপ পর্যাপ্ত মনে করেন সেইরুপ পরিমাণ অর্থের জন্য একটি মুচলেকা সম্পাদন করবে এবং যখন তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়, তখন এক বা একাধিক পর্যাপ্ত জামিনদার এই শর্তে মুচলেকা সম্পাদন করবে যে, উক্ত ব্যক্তি মুচলেকায় উল্লিখিত সময়ে ও স্থানে হাজির হবে এবং পুলিশ কর্মকর্তা বা আদালত ভিন্নরূপ নির্দেশ না দেওয়া অবধি অনুরূপে হাজির হতে থাকবে।

২) মামলার জন্য এই আবশ্যক হলে জামিনে মুক্ত ব্যক্তির জন্য আরও শর্ত থাকবে যে, অভিযােগপত্রের জবাব দানের জন্য আহ্বান করা হলে হাইকোর্ট বিভাগ, দায়রা আদালত বা অন্য কোন আদালতে হাজির হতে হবে।

ধারা ৫০০ হেফাজত হতে মুক্তিদান

১) বণ্ড সম্পাদিত হওয়ার সাথে সাথে যে ব্যক্তির হাজিরার জন্য উহার সম্পাদন করা হল তাকে মুক্তি দিতে হবে এবং সে জেলে থাকলে জামিন মঞ্জুরকারি আদালত উক্ত জেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মুক্তির আদেশ দান করবেন এবং কর্মকর্তা এই আদেশ পেয়ে তাকে মুক্তি দিবেন।

২) যে মামলায় বণ্ড সম্পাদন করা হল কোন ব্যক্তি সেই মামলা ব্যতিত অপর কোন ব্যাপারে আটক থাকিতে বাধ্য হলে এই ধারায় ৪৯৬ ধারা বা ৪৯৭ ধারার কোন বিধানে তার মুক্তি দাবি করা যাবে বলে মনে করা হবে না।

ধারা ৫০১ প্রথম জামানত অপর্যাপ্ত হলে পর্যাপ্ত জামানত গ্রহণের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা

ভুলবশত, প্রবঞ্চনাবশতঃ বা অন্য কোনভাবে অপর্যাপ্ত জামানত গ্রহণ করা হলে, বা তা পরে অপর্যাপ্ত হয়ে পড়িলে জামিনে মুক্ত ব্যক্তিকে হাজির করার নির্দেশ দিয়া আদালত গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট প্রদান করতে পারবেন এবং পর্যাপ্ত জামানত সংগ্রহ করতে বলিবেন এবং সংগ্রহ করতে না পারিলে তাকে জেলে প্রেরণের আদেশ দিতে পারবেন।

ধারা ৫০২ জামিনদারের অব্যাহতি

১) জামিনে মুক্ত কোন ব্যক্তির হাজির হওয়ার জন্য জামিনদারদের সবাই কিংবা যে কোন একজন যে কোন সময় মুচলেকাখানি সম্পূর্ণ বা উহার যে অংশ তাদের বা তার সাথে সম্পর্কযুক্ত সেই অংশ বাতিল করার জন্য যে কোন ম্যাজিস্ট্রেটের সমীপে আবেদন পেশ করতে পারবেন।

২) এইরূপ আবেদন দাখিল করা হলে জামিনে মুক্ত ব্যক্তিকে হাজির করার নির্দেশ দিয়া ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারী পরােয়ানা প্রদান করবেন।

৩) পরােয়ানা অনুসারে উক্ত ব্যক্তি হাজির হলে কিংবা সে স্বেচ্ছায় আত্মসমপর্ণ করলে ম্যাজিস্ট্রেট মুচলেকাখানি সম্পূর্ণ কিংবা আবেদনকারির সাথে সংশ্লিষ্ট অংশ বাতিল করবেন, এবং উক্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত অন্য জামিনদার সংগ্রহ করতে বলিবেন, এবং সে যদি সংগ্রহ করতে না পারে তা হলে তাকে জেলে প্রেরণ করবেন।

Popular Posts

Write a paragraph on environment pollution পরিবেশ দূষণ

Write a paragraph on environment pollution (পরিবেশ দূষণ) Environment Pollution Environment pollution means the pollution of air, water, sound, odour, soil and other elements of it. We need safe and clean environment. Pollution of it has tremendous bad effects. Any sort of pollution may bring the doom of life. At present, our environment is being polluted at an alarming rate, Air, the most important element of environment is polluted by smoke from railway engines and power-houses, or the burning of coal and oil or the making of bricks. Water, another vital element is being polluted by the use of chemicals and insecticides or oil seeping from damaged super tankers or by industrial discharge. Sound pollution is caused by the use of microphones and loud speakers. All these pollutions may wipe out our existence from the earth. The destruction of forest also causes environment imbalance that makes the wild animals wipe out. So, it is our moral duty to prevent environment pollution. We must ...

HSC English First Paper English For Today Unit 3 Lesson 4

HSC English First Paper English For Today Unit 3 Lesson 4 Khona The mythical story of Khona is deeply rooted in Bangla folklore. Khona, originally named Lila, an incredible woman with a gift for predicting weather and understanding the ways of farming. Her wisdom was shared through memorable rhyming verses known as “Khona's Words" or "Khonar Bochon." These sayings, though simple and easy to remember, were filled with practical advice for farmers. Khona used her knowledge to help the peasants, but her actions often challenged the ruling class. The rulers, not pleased with her defiance, punished her cruelly by cutting out her tongue. Thus she became known as Khona, which means “someone who cannot speak." Despite this harsh punishment, her wisdom lived on through her sayings, which have been passed down for over 1500 years. There are many versions of Khona's story. One retelling goes like this: in the kingdom of Deyulnagar, there was a royal astrologer n...

HSC English First Paper English For Today Unit 1 Lesson 3

HSC English First Paper English For Today Unit 1 Lesson 3 Children in School  The New School Part-I: Reading Test  When she saw the gate of the new school, Totto-chan stopped. The gate of the school she used to go to had fine concrete pillars with the name of the school in large characters. But the gate of this new school simply consisted of two rather short posts that still had twigs and leaves on them. "This gate's growing." said Totto-chan. "It'll probably go on growing till it's taller than the telephone poles! The two "gateposts" were clearly trees with roots. When she got closer, she had to put her head to one side to read the name of the school because the wind had blown the sign askew. "To-mo-e Ga-ku-en." Totto-chan was about to ask Mother what "Tomoe" meant, when she caught a glimpse of something that made her think she must be dreaming. She squatted down and peered through the shrubbery to get a better look, and ...