- Get link
- X
- Other Apps
অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান। পরীক্ষা: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ প্রশ্ন নং ২
আসন্ন বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি। বিগত বছরের বার কাউন্সিল আয়োজিত অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান। পরীক্ষা: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শনিবার। প্রশ্ন নং ২ এর ক ও খ
২। ক. Judgment on Admissions’ কী? আদালত কোন ক্ষেত্রে উক্তরূপ রায় প্রদান করেন? সংশ্লিষ্ট বিধান উল্লেখে উত্তর দিন।
খ. ২০০৩ সালের ৪০ নং আইনের দ্বারা The Code of Civil Procedure, 1908 Order XVII rule 1 এ মামলা মূলতবী সংক্রান্ত যে বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে তা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? বিস্তারিত উত্তর দিন।
আলোচনা
২। ক. Judgment on Admissions’ কী? আদালত কোন ক্ষেত্রে উক্তরূপ রায় প্রদান করেন? সংশ্লিষ্ট বিধান উল্লেখে সংক্ষেপে উত্তর দিন।
"Judgment on Admissions" বা স্বীকারোক্তিমূলক রায় হলো এমন একটি রায় যা আদালত কোনো মামলার এক পক্ষের স্পষ্ট স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে প্রদান করেন। দেওয়ানি কার্যবিধির (Code of Civil Procedure, 1908) Order XII Rule 6 অনুযায়ী, যখন কোনো মামলার এক পক্ষ লিখিতভাবে বা মৌখিকভাবে (যদি লিখিতভাবে রেকর্ড করা হয়) তার প্রতিপক্ষের দাবি বা দাবির অংশবিশেষ স্বীকার করে নেয়, তখন আদালত সেই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রায় প্রদান করতে পারেন।
আদালত কোন ক্ষেত্রে উক্তরূপ রায় প্রদান করেন?
আদালত নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তিমূলক রায় প্রদান করতে পারেন:
লিখিত স্বীকারোক্তি: যখন কোনো পক্ষ আরজি, লিখিত জবাব, হলফনামা, জবানবন্দি বা অন্য কোনো নথিতে স্পষ্টভাবে কোনো তথ্য বা দাবি স্বীকার করে নেয়।
মৌখিক স্বীকারোক্তি: যখন কোনো পক্ষ আদালতের সামনে মৌখিকভাবে কোনো তথ্য বা দাবি স্বীকার করে এবং সেই স্বীকারোক্তি লিখিতভাবে রেকর্ড করা হয়।
অন্তর্নিহিত স্বীকারোক্তি: যখন কোনো পক্ষ এমন কোনো আচরণ করে বা এমন কোনো বক্তব্য দেয় যা থেকে বোঝা যায় যে সে প্রতিপক্ষের দাবি স্বীকার করে নিয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ: যদি কোনো মামলায় বিবাদী তার লিখিত জবাবে স্পষ্ট করে বলে যে সে বাদীর ঋণের দাবি স্বীকার করে, তবে আদালত সেই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাদীর পক্ষে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য রায় দিতে পারেন, এমনকি যদি মামলার অন্যান্য বিষয়গুলি বিতর্কিত থাকে।
এই ধরনের রায় প্রদানের উদ্দেশ্য হলো মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমানো এবং বিতর্কিত নয় এমন বিষয়গুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করা। আদালতকে সন্তুষ্ট হতে হবে যে স্বীকারোক্তিটি স্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন এবং সম্পূর্ণ।
খ. ২০০৩ সালের ৪০ নং আইনের দ্বারা The Code of Civil Procedure, 1908 Order XVII rule 1 এ মামলা মূলতবী সংক্রান্ত যে বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে তা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? ধারা সহ সংক্ষেপে উত্তর দিন।
২০০৩ সালের ৪০ নং আইনের দ্বারা The Code of Civil Procedure, 1908 এর Order XVII Rule 1 এ মামলা মূলতবী (adjournment) সংক্রান্ত যে সংশোধনী আনা হয়েছে, তা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই সংশোধনীটি মূলত মূলতবীর আবেদন সীমিত করে এবং মূলতবী মঞ্জুরের শর্তাবলী কঠোর করে।
সংশোধিত বিধান (Order XVII Rule 1):
এই ধারার মূল পরিবর্তনগুলো নিম্নরূপ:
সীমিত মূলতবী: সংশোধিত বিধান অনুযায়ী, একটি মামলার শুনানিতে মূলতবী প্রদানের সংখ্যা তিনবারের বেশি হবে না, যদি না আদালত বিশেষ কারণ বা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভিন্ন নির্দেশ দেন।
কারণ লিপিবদ্ধকরণ: যদি আদালত মূলতবী মঞ্জুর করেন, তবে তাকে মূলতবী মঞ্জুরের কারণ লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
আর্থিক দণ্ড: মূলতবীর আবেদন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে আদালত আবেদনকারী পক্ষকে আর্থিক দণ্ড (costs) আরোপ করতে পারেন, যা অন্য পক্ষকে প্রদান করতে হবে। এটি মূলতবী চাওয়ার প্রবণতা কমাতে সহায়ক।
অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি: মূলতবী শুধুমাত্র বিশেষ এবং অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে মঞ্জুর করা উচিত, যখন তা আদালতের বিবেচনায় অনিবার্য হয়।
মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে ভূমিকা:
এই সংশোধনীগুলো নিম্নলিখিত উপায়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে ভূমিকা রাখতে পারে:
মূলতবীর অপব্যবহার রোধ: পূর্বের আইনে মূলতবীর আবেদন প্রায়শই মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণ ছিল। নতুন বিধান মূলতবীর সংখ্যা সীমিত করে এই অপব্যবহার রোধ করে।
সময়ানুবর্তিতা বৃদ্ধি: মূলতবী সীমিত হওয়ায় পক্ষগণ এবং তাদের আইনজীবীরা মামলার শুনানিতে সময়মতো প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হন, যা পুরো বিচার প্রক্রিয়ার গতি বাড়ায়।
আর্থিক চাপ সৃষ্টি: মূলতবীর জন্য আর্থিক দণ্ড আরোপের বিধান মূলতবী চাওয়ার প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করে।
আদালতের কার্যকারিতা বৃদ্ধি: মূলতবীর কারণ লিপিবদ্ধকরণের বাধ্যবাধকতা আদালতকে মূলতবী মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক ও যুক্তিযুক্ত হতে বাধ্য করে, যা আদালতের সামগ্রিক কার্যকারিতা বাড়ায়।
বিচার প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস স্থাপন: দ্রুত বিচার ব্যবস্থার ফলে জনগণের বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পায়।
সংক্ষেপে, ২০০৩ সালের ৪০ নং আইনের মাধ্যমে Order XVII Rule 1 এ আনা সংশোধনী মূলতবী প্রদানের ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করে, যা মামলার অযাচিত দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।