- Get link
- X
- Other Apps
অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান। পরীক্ষা: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০
বিগত বছরের বার কাউন্সিল আয়োজিত অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা
বিগত বছরের বার কাউন্সিল আয়োজিত অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান। পরীক্ষা: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০। প্রশ্ন নং ২ এর ক ও খ
২। (ক) “Court shall not pass exparte order of ad interim injunction without hearing the opposite party.”- The Code of Civil Procedure, 1908 এর Order - XXXIX, rule 5A এর আলোকে মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করুন।
(খ) আপনার প্রতিপক্ষের বিজ্ঞ কৌশুলি নালিশী জমির বাজার মূল্য নির্ধারণ, বর্তমান অবস্থা ব্যাখ্যা ও এর বর্তমান দখলকার নির্ধারণের জন্য The Code of Civil Procedure, 1908 এর Order - XXVI, rule-9 অনুযায়ী স্থানীয় তদন্তের প্রার্থনায় যুগ্ম জেলা জজ আদালত, পঞ্চগড় এ আবেদন দাখিল করেছেন। এই দরখাস্তের বিরোধিতায় আপনার ৫টি যুক্তি সংশ্লিষ্ট আইনের বরাতসহ লিপিবদ্ধ করুন।
আলোচনা
২। ক) “Court shall not pass exparte order of ad interim injunction without hearing the opposite party.”
এই মন্তব্যটি ১৯০৮ সালের দেওয়ানি কার্যবিধি (The Code of Civil Procedure, 1908) এর Order XXXIX, Rule 5A অনুসারে সঠিক এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি নীতি। এই বিধানটি অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার (ad-interim injunction) ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।
Order XXXIX, Rule 5A অনুযায়ী, আদালত কোনো বিবাদীর বিরুদ্ধে তার বক্তব্য না শুনে একতরফাভাবে (exparte) অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিতে পারেন না, যদি না কিছু জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হয়। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ন্যাচারাল জাস্টিসের নীতি (principles of natural justice) রক্ষা করা। এর অর্থ হলো, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো আইনি আদেশ দেওয়ার আগে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে, যা "audi alteram partem" (অন্য পক্ষকেও শোনো) নামে পরিচিত।
তবে, এই নিয়মের কিছু ব্যতিক্রমও আছে। যদি আদালত মনে করেন যে, নিষেধাজ্ঞা না দিলে মোকদ্দমার বিষয়বস্তুর irreparable loss বা অপূরণীয় ক্ষতি হবে, তাহলে যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করে বিবাদীকে নোটিশ না দিয়েই একতরফা আদেশ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে, আদালতকে সেই কারণগুলো লিখিতভাবে রেকর্ড করতে হবে এবং বিবাদীকে ৭ দিনের মধ্যে নিষেধাজ্ঞার আদেশের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হবে।
মূলত, Rule 5A এটি নিশ্চিত করে যে, নিষেধাজ্ঞা একটি কঠোর প্রতিকার, যা সাধারণত অন্য পক্ষের বক্তব্য শোনার পরেই দেওয়া উচিত। এটি বিবাদীর আইনি অধিকার সুরক্ষিত রাখে এবং আদালতের আদেশ যাতে ভারসাম্যপূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করে।
২। খ) স্থানীয় তদন্তের প্রার্থনার বিরোধিতায় যুক্তি
আপনার প্রতিপক্ষের বিজ্ঞ কৌশুলি Order XXVI, Rule 9 অনুযায়ী যে স্থানীয় তদন্তের (local investigation) জন্য আবেদন করেছেন, তার বিরোধিতায় নিম্নোক্ত ৫টি যুক্তি সংশ্লিষ্ট আইনের বরাতসহ লিপিবদ্ধ করা হলো:
আবেদনের অযোগ্যতা (Inapplicability of the Application): Order XXVI, Rule 9 অনুযায়ী, স্থানীয় তদন্তের আবেদন তখনই করা যায় যখন এটি মোকদ্দমার বিচারিক সিদ্ধান্তের জন্য অপরিহার্য। নালিশী জমির বাজার মূল্য নির্ধারণ, বর্তমান অবস্থা ব্যাখ্যা এবং দখলদার নির্ধারণের মতো বিষয়গুলো সাধারণত সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে (যেমন, দলিল, সাক্ষী, বা অন্যান্য প্রমাণ) প্রমাণ করা সম্ভব। তাই, স্থানীয় তদন্তের প্রয়োজন নেই।
অন্যান্য পদ্ধতির প্রাপ্য সুযোগ (Availability of other means): Civil Procedure Code, Order VII, Rule 11 এবং Order VI, Rule 2 অনুসারে, মোকদ্দমার আরজিতেই জমির বাজার মূল্য এবং বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করতে হয়। এই বিষয়ে বাদী তার নিজের বক্তব্য এবং দলিল-দস্তাবেজ দিয়ে প্রমাণ করতে পারেন।
আদালতের সময় ও অর্থ অপচয়: যদি স্থানীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণের জন্য অপ্রয়োজনীয়ভাবে আবেদন করা হয়, তবে এটি আদালত এবং পক্ষগণের মূল্যবান সময় ও অর্থ অপচয় করে। আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে থাকা বিষয়গুলো সহজেই প্রমাণ করা যায়, সেক্ষেত্রে স্থানীয় তদন্তের প্রয়োজন হয় না।
কমিশনারের এখতিয়ারের সীমাবদ্ধতা: একজন স্থানীয় তদন্তকারী কমিশনারের (Local Commissioner) দায়িত্ব হলো শুধুমাত্র আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো তদন্ত করা, কিন্তু জমির বাজার মূল্য নির্ধারণ, যা সাধারণত বিশেষজ্ঞ বা আদালতের বিচার্য বিষয়, এটি তার এখতিয়ার বহির্ভূত হতে পারে।
কমিশনারের মতামত প্রমাণের অংশ নয়: Evidence Act, 1872 এর ধারা ৪৬ এবং ৪৭ অনুযায়ী, একজন কমিশনারের রিপোর্ট কোনো সিদ্ধান্তমূলক প্রমাণ নয়। এটি কেবলমাত্র একটি মতামত বা একটি পর্যবেক্ষণ। বাদী বা বিবাদী যদি প্রমাণ না দিতে পারেন, তাহলে Commissioner-এর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।