- Get link
- X
- Other Apps
বার কাউন্সিল ও জুডিসিয়াল সার্ভিস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি - পর্ব ১৮
অভিযোগপত্র (Charge-sheet) ও তদন্ত (Investigation) সংক্রান্ত:
একটি ফৌজদারি মামলায় পুলিশ তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। কিন্তু ভুক্তভোগী মনে করেন যে তদন্তে ত্রুটি ছিল এবং আরও কিছু ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা উচিত। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর প্রতিকার কি?
পুলিশ একজন ব্যক্তিকে কোনো প্রকার পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করেছে। এই গ্রেপ্তার কি বৈধ? পুলিশ কখন পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারে?
একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি আমলযোগ্য (Cognizable) অপরাধ সংঘটিত হতে দেখেছেন। তিনি কি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারেন, নাকি ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করবেন?
আলোচনা
ভুক্তভোগী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারার অধীনে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে আপত্তি জানাতে পারেন। ভুক্তভোগী যদি মনে করেন যে তদন্তে ত্রুটি ছিল এবং আরও কিছু ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা উচিত, তাহলে তিনি আদালতে একটি "নারাজি পিটিশন" (Naraji Petition) দাখিল করতে পারেন। আদালত তখন পিটিশনটি বিবেচনা করে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন বা সরাসরি মামলাটি আমলে নিতে পারেন।
পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার (ধারা ৪৬, ৫৪)
গ্রেপ্তারের বৈধতা: পুলিশ কোনো পরোয়ানা ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারে যদি সেই গ্রেপ্তার ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অধীনে বৈধ হয়। অন্যথায়, এমন গ্রেপ্তার অবৈধ হবে।
![]() |
পুলিশ কোনো পরোয়ানা ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারে যদি সেই গ্রেপ্তার ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার অধীনে বৈধ হয় |
পুলিশ কখন পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারে (ধারা ৫৪):
১. যেকোনো আমলযোগ্য (Cognizable) অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তি বা যার বিরুদ্ধে যুক্তিসঙ্গত অভিযোগ আছে।
২. যার কাছে ঘর ভাঙার সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
৩. সরকারি ঘোষণার মাধ্যমে যাকে অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
৪. যার কাছে চুরি করা সম্পত্তি আছে বা চোরাই সম্পত্তি আছে বলে সন্দেহ করা হয়।
৫. সরকারি কাজে বাধা দেয় বা হেফাজতে থেকে পালানোর চেষ্টা করে।
৬.!সশস্ত্র বাহিনীর পলাতক সদস্য।
৭. বাংলাদেশের বাইরে কোনো স্থানে কৃত অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তি।
৮. যাকে অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তা পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারের জন্য অনুরোধ করেছেন।
ধারা ৪৬ অনুসারে, গ্রেপ্তার করার সময় কোনো ব্যক্তি যদি তার গ্রেপ্তারে বাধা দেয়, তাহলে পুলিশ প্রয়োজনীয় বল প্রয়োগ করতে পারে।
আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশের ক্ষমতা (ধারা ১৫৪, ১৫৫, ১৫৬)
আমলযোগ্য অপরাধ (Cognizable Offence): একজন পুলিশ কর্মকর্তা যখন একটি আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হতে দেখেন, তখন তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতির জন্য অপেক্ষা না করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
১৫৪ ধারা: আমলযোগ্য অপরাধের খবর পাওয়ার পর পুলিশকে অবশ্যই তা লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং এর একটি কপি তথ্য প্রদানকারীকে দিতে হবে। এটিই এজাহার (First Information Report - FIR) হিসেবে পরিচিত।
১৫৬ ধারা: আমলযোগ্য অপরাধের তদন্ত করার ক্ষমতা পুলিশ কর্মকর্তার রয়েছে। এই তদন্তের জন্য তার ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। এই ধারার অধীনে করা কোনো তদন্তকে কোনো আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না এই কারণে যে পুলিশ কর্মকর্তার তদন্ত করার ক্ষমতা ছিল না।
১৫৫ ধারা: অ-আমলযোগ্য (Non-Cognizable) অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়া তদন্ত করতে পারে না এবং কোনো আসামিকে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারে না।