- Get link
- X
- Other Apps
বার কাউন্সিল ও জুডিসিয়াল সার্ভিস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি - পর্ব ২৫
ফৌজদারী কার্যবিধি (Criminal Procedure Code):
ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪১(ক) ধারার বিধান অনুযায়ী আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদালত কি কি বিষয় বিবেচনা করে?
ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আসামীর জবানবন্দি রেকর্ড করার পদ্ধতি আলোচনা করুন।
আলোচনা
আদালত ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪১(ক) ধারা অনুযায়ী আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করে। এই ধারাটি মূলত অভিযোগ গঠনের আগে সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ দেয়।
২৪১(ক) ধারার বিধান অনুযায়ী আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদালতের বিবেচ্য বিষয়
ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪১(ক) ধারা অনুযায়ী, অভিযোগ গঠনের আগে আদালত মামলার নথি ও এর সঙ্গে সংযুক্ত সব নথিপত্র এবং সাক্ষীর জবানবন্দি (পুলিশ কর্তৃক সংগৃহীত) সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করে। এই পর্যালোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো এটি নির্ধারণ করা যে, আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধের জন্য যথেষ্ট কারণ আছে কিনা।
আদালত যদি এই পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট কারণ নেই, তাহলে আদালত তাকে লিখিত আদেশ দ্বারা মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারে। এই আদেশে আদালত তার সিদ্ধান্তের কারণ উল্লেখ করবে। তবে, যদি আদালত মনে করে যে অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট কারণ বিদ্যমান, তাহলে ২৪২ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ গঠন করা হয়।
ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামীর জবানবন্দি রেকর্ড করার পদ্ধতি
ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আসামীর জবানবন্দি বা স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই জবানবন্দি রেকর্ড করার সময় ম্যাজিস্ট্রেটকে কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয় যাতে এটি আইনগতভাবে বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য হয়।
![]() |
১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আসামীর জবানবন্দি বা স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার পদ্ধতি |
১৬৪ ধারার অধীনে জবানবন্দি গ্রহণের পদ্ধতি:
১. স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হওয়া: ম্যাজিস্ট্রেট নিশ্চিত হবেন যে আসামী স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এবং কোনো চাপ, হুমকি বা প্রলোভন ছাড়াই জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক।
২. সতর্কীকরণ: জবানবন্দি রেকর্ড করার আগে ম্যাজিস্ট্রেট আসামীকে সতর্ক করে দেবেন যে, সে এই জবানবন্দি দিতে বাধ্য নয় এবং যদি সে জবানবন্দি দেয়, তবে তা তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
৩. স্বীকারোক্তি না করার স্বাধীনতা: ম্যাজিস্ট্রেট আসামীকে জানাবেন যে সে এখন বা পরবর্তীতে জবানবন্দি দিতে বা কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তর দিতে অস্বীকার করতে পারে।
৪. স্বেচ্ছাপ্রণোদিততা নিশ্চিতকরণ: জবানবন্দি রেকর্ড করার সময় ম্যাজিস্ট্রেট আসামীর স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হওয়ার বিষয়ে একটি স্মারকপত্র (Memorandum) লিখে দেবেন। এই স্মারকপত্রে ম্যাজিস্ট্রেট উল্লেখ করবেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন আসামী স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছে।
৫. লিখন ও স্বাক্ষর: ম্যাজিস্ট্রেট আসামীর জবানবন্দি তার নিজের হাতে বা তার নির্দেশে অন্য কোনো ব্যক্তির দ্বারা লিপিবদ্ধ করাবেন। জবানবন্দি শেষ হওয়ার পর তা আসামীকে পড়ে শোনানো হবে এবং আসামীকে তাতে স্বাক্ষর করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেটও সেই নথিতে স্বাক্ষর করবেন।
এই প্রক্রিয়াগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ না করলে ১৬৪ ধারার অধীনে রেকর্ড করা জবানবন্দি আইনগতভাবে অগ্রহণযোগ্য হতে পারে।